গ্রীষ্মকাল শুরু হয়েছে। চারধাম যাত্রার দ্বার খুলে যাবে এবার। এই যাত্রার জন্য আগে থেকেই নিজেদের রেজিট্রেশন সেরে ফেলেন তীর্থযাত্রীরা। হিন্দু ধর্মে চারধাম যাত্রা অত্যন্ত পবিত্র বলে বিবেচিত হয়। এই যাত্রা উত্তরাখণ্ডের চারটি পবিত্র স্থান, যমুনোত্রী, গঙ্গোত্রী, কেদারনাথ ও বদ্রীনাথ ঘিরে আবর্তিত হয়। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষ এই যাত্রায় অংশগ্রহণ করে। ২০২৫ সালের ৩০ এপ্রিল, অক্ষয় তৃতীয়ার দিন থেকে এই যাত্রা শুরু হতে চলেছে। কিন্তু আপনি কি জানেন কেন এই যাত্রা কেবল যমুনোত্রী থেকেই শুরু হয়?
যমুনোত্রী থেকেই কেন শুরু হয় চারধাম যাত্রা
প্রথমে ধর্মীয় কারণ নিয়ে কথা বলা যাক। যমুনোত্রী হল সেই স্থান যেখানে যমুনা নদীর উৎপত্তি হয়। হিন্দু ধর্মে গঙ্গার মতো যমুনাকে দেবী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কথিত আছে যে যমুনা হলেন যমরাজের বোন। প্রাচীন বিশ্বাস অনুসারে, যে ব্যক্তি এই নদীতে স্নান করে বা যমুনোত্রীতে যাতায়াত করে, তার মৃত্যুর ভয় দূর হয় এবং সে মোক্ষ লাভ করে। এই কারণে, ভক্তরা যমুনোত্রী থেকে এই যাত্রা শুরু করাকে শুভ বলে মনে করেন।
এখন ভৌগোলিক কারণ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। চারটি ধামের মধ্যে, যমুনোত্রী সবচেয়ে বেশি পশ্চিমদিক ঘেঁষে অবস্থিত। ভ্রমণকারীরা যখন যাত্রা শুরু করে, তারা পশ্চিম থেকে পূর্বে চলে যায়। এই দিকটি ভ্রমণের জন্য সর্বোত্তম বলে বিবেচিত হয় কারণ এটি পথ সহজ এবং সুবিধাজনক করে তোলে। পাহাড়ি রাস্তায় এই ধারাবাহিকভাবে হাঁটলে যাত্রা ক্লান্তিকর হয় না এবং প্রতিটি পবিত্র স্থানে পৌঁছানো একটু সহজ হয়ে যায়।
পৌরাণিক বিশ্বাস আবার অন্য কথা বলে
যমুনোত্রী থেকেই চারধাম যাত্রা শুরুর আরও একটি কারণ হল পুরনো ঐতিহ্য। প্রাচীনকালে, ঋষি এবং সাধুরাও যমুনোত্রী থেকে তাঁদের যাত্রা শুরু করতেন। সেই সময় থেকে আজ পর্যন্ত এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। মানুষ এটিকে একটি ঐতিহ্য বলে মনে করে এবং এইভাবে যাত্রা সম্পন্ন করে। বলা হয় যে যমুনোত্রী থেকে চারধাম যাত্রা শুরু করা কেবল একটি ঐতিহ্য নয়, বরং এর পিছনে রয়েছে গভীর ধর্মীয় বিশ্বাস, বিজ্ঞতার সঙ্গে নির্বাচিত দিকনির্দেশনা এবং বছরের পর বছর ধরে ভক্তির আশ্বাস। এই যাত্রা আত্মাকে পবিত্র করার এবং ঈশ্বরের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার একটি সুন্দর উপায় বলে মনে করা হয়। অতএব, যদি আপনিও চারধাম যাত্রা করার কথা ভাবছেন, তাহলে প্রথমেই যমুনোত্রীর টিকিট বুক করতে ভুলবেন না।