জেলায় জেলায় আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসছে। অভিযোগ উঠছে, প্রকৃত উপভোক্তাদের নাম আবাসের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। আবার পাকা বাড়ি ও প্রচুর সম্পত্তি থাকা সত্ত্বেও আবাসের তালিকায় নাম থাকছে অনেকের, বিশেষ করে শাসক দলের নেতাদের নাম থাকছে। এনিয়ে এই মুহূর্তে তোলপাড় গোটা রাজ্য। সেই আবহে দোতলা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও আবাসের তালিকায় নাম এসেছে দুই তৃণমূল নেতার। তারপরেই অবশ্য তালিকায় নাম বাদ দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন তৃণমূল নেতার। তাসত্ত্বেও অবশ্য তাদের অস্বস্তি কমছে না। এবার এই ঘটনায় তদন্তের দাবি জানাল বিজেপি। ঘটনাটি বাঁকুড়ার পাত্রসায়ের ব্লকের বালসী ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের পানপুকুর মাঝি পাড়ার।
আরও পড়ুন: সঠিক তথ্যের অভাবে আবাসে ৫১ হাজার বাড়ির অনুমোদন দিতে পারছে না রাজ্য
জানা গিয়েছে, পানপুকুর মাঝি পাড়া গ্রামের বাসিন্দা নিমাই মাঝি এবং আনন্দ মাঝি। তারা দুই ভাই। এরমধ্যে তৃণমূলের স্থানীয় অঞ্চল সহ সভাপতি হলেন নিমাই মাঝি। আর আনন্দ মাঝি তৃনমূলের অঞ্চল কোর কমিটির সদস্য। দুই ভাই একসঙ্গে নিজেদের দোতলা বাড়িতে থাকেন। কিন্তু, তারপরেও আবাস তালিকায় নাম ছিল তাঁদের। সেই বিষয়টি জানার পরেই সমীক্ষা শুরু হতে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে আবাসের বাড়ি না নেওয়ার জন্য বিডিও অফিসে আবেদন জানিয়েছেন তারা।
জানা যায়, সম্প্রতি সমীক্ষার কাজ শুরু হলে আবাসের তালিকায় দুই ভাইয়ের নাম আসে। তারপরেই তাঁরা বিডি অফিসে নাম প্রত্যাহারের লিখিত আবেদন জানান। তাই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির দাবি, জনরোষের ভয়ে এমন সিদ্ধান্ত। তবে তৃণমূল নেতাদের দাবি, যে পাঁচ বছর আগে তাদের পাকা বাড়ি ছিল না। তারা মাটির বাড়িতে থাকতেন। পরবর্তীতে এই পাকা বাড়ি তৈরি করেছেন। তাই তাঁদের সেই সময় সমীক্ষায় নাম এসেছিল। এখন তাঁরা নাম বাদ দিতে চাইছেন। তৃণমূল নেতৃত্ব এই পদক্ষেপের প্রশংসা করলেও এ নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেছে বিজেপি। তাদের বক্তব্য, ৫ বছর আগে পরিবারটি কাঁচা বাড়িতে বাস করত। তাহলে গত ৫ বছরে কীভাবে তাঁরা দোতলা বাড়ি করে ফেলল? কোথা থেকে এত টাকা পেল? তার তদন্ত করা প্রয়োজন। সেই তদন্ত হলেই বেরিয়ে আসবে যে তারা কোনও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে ছিল কিনা। প্রসঙ্গত, এই আবাস প্রকল্পের তালিকা নিয়ে এই প্রথম নয়, বহু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও শাসক দলের নেতা বা ঘনিষ্ঠ হওয়া অনেকের নাম উঠেছে তালিকায়। আর সেক্ষেত্রে বাদ যাচ্ছে যোগ্যদের নাম।