কুমারটুলির পর উত্তর ২৪ পরগনার মুড়াগাছা। ফের কলকাতা শহরতলিতে নৃশংস খুনের পর ট্রলি ব্যাগে ভরে দেহ লোপাটের চেষ্টা বানচাল হল সাধারণ মানুষের তৎপরতায়। হাতে নাতে ধরা পড়ল খুনি। মঙ্গলবার রাতে হাড় হিম করা এই ঘটনায় ২ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে ঘোলা থানার পুলিশ। নিহত ভাগারাম সিংয়ের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য বারাকপুর বিএন বসু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন - মুসলিম তোষণ করতে হাইকোর্টেরও পরোয়া করেন না মমতা: শংকর ঘোষ
পড়তে থাকুন - শুভেন্দু কি এবার ভবানীপুরে দাঁড়াবেন? কী বলছেন সুকান্ত! 'মমতাকে হারাব'
মঙ্গলবার রাত ৯টা নাগাদ মুড়াগাছার কাছে খেপলির বিলের পাশে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে থামে একটি ট্যাক্সি। ট্যাক্সিতে ছিলেন ২ যুবক। তারা ট্যাক্সির ডিকিতে একটি ভারী ট্রলি ব্যাগ তুলেছিলেন। নির্জন জায়গায় ট্যাক্সি থেকে নেমে সেই ট্রলি নামানোর সময় ট্যাক্সি চালক তাঁদের জেরা শুরু করেন। জানতে চান, ট্রলিতে কী রয়েছে? কিন্তু কিছুতেই তা বলতে রাজি ছিল না ওই ২ যুবক। উলটে ট্যাক্সি চালককে বেশি টাকা নিয়ে চলে যেতে বলে তারা। এতে ট্যাক্সিচালকের মনে সন্দেহ আরও দৃঢ় হয়। কিছুতেই সেখান থেকে যেতে রাজি ছিলেন না ক্যাব চালক। এর মধ্যে সেখানে এসে পড়ে ঘোলা থানার টহলদারি ভ্যান। হাত দেখিয়ে পুলিশের গাড়ি দাঁড় করান ক্যাব চালক। পুলিশের গাড়ি দেখেই ছুটে পালানোর চেষ্টা করে ২ যুবক। কিন্তু তাদের মধ্যে একজনকে জাপটে ধরে ফেলেন ক্যাব চালক। এর পর ট্রলি ব্যাগ খুললে জানা যায় তার ভিতরে রয়েছে এক যুবকের দেহ। ও ৬৫ হাজার টাকা। এর পরই প্রকাশ্যে আসে চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড।
ধৃত যুবক জানায় তার নাম করণ সিং। দেহটি ভাগারাম সিং নামে রাজস্থানের বাসিন্দা এক ব্যবসায়ীর। তাঁর কাছে ৮ লক্ষ টাকা পাওনা ছিল কৃষ্ণরাম সিং নামে বড়বাজারের এক ব্যবসায়ীর। ধৃত জানিয়েছে, পাওনা টাকা না মেটানোয় মঙ্গলবার দুপুরে বড়বাজারের একটি গুদামে ভাগারামকে খুন করে কৃষ্ণরাম। প্রথমে কফিতে মাদক মিশিয়ে তাঁকে অজ্ঞান করে ফেলে সে। তার পর গলার নলি কেটে খুন করে তাঁকে। মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলায় ফাঁসও দেয়। এর পর একটি স্যুটকেসে দেহ ভরে ১৬৫ নম্বর মুক্তারামবাবু স্ট্রিটের একটি গুদামে রেখে চলে যায়। এর পর কাপড় বদলে বড় বাজারে কারবার করতে চলে যায় কৃষ্ণরাম। সন্ধ্যায় বড় বাজার থেকে একটি ট্যাক্সি নিয়ে সে পৌঁছয় দমদমের নাগের বাজারে। সেখানে আগে থেকেই হাজির ছিলেন করণ সিং। সেখান থেকে ২ জনে আরও একটি ট্যাক্সিতে ওঠেন। পৌঁছন খেপলির বিলে।
আরও পড়ুন - ‘বাবা-মা বাংলাদেশি হলেও আমি ভারতীয়!’ দাবি তৃণমূলের ‘আগুনে’ যুবনেতার
ওদিকে রাতেই পলাতক কৃষ্ণরামকে তন্ন তন্ন করে খোঁজা শুরু করে পুলিশ। মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে রাতেই গিরিশ পার্কের একটি ঠিকানা থেকে গ্রেফতার করে তাকে। এই ঘটনার তদন্ত করছে ঘোলা থানার পুলিশ। কেন ট্রলি ব্যাগের ভিতরে ৬৫ হাজার টাকা রাখা ছিল তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, ভাগারাম চুড়িদারের কাপড়ের ব্যবসায়ী ছিলেন। দীপাবলীর পর থেকে কৃষ্ণরামের ৮ লক্ষ টাকা শোধ করছিলেন না তিনি।