মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওঁদের কাছে 'ব্রাত্য'। কিন্তু, ওঁরা তাঁকে 'গ্রহণ করেছেন'! তাই তিনি 'কৃতজ্ঞ'! তিনি - অর্থাৎ - রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর দাবি, ওয়াকফ-হিংসার সময় মুর্শিদাবাদের যে বাবা-ছেলের মৃত্যু হয়েছিল, সেই দু'টি পরিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা রাজ্য সরকারের আর্থিক ক্ষতিপূরণ গ্রহণ না করলেও বিরোধী দলনেতার দেওয়া অর্থ সাহায্যের চেক গ্রহণ করেছে।উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্টের কাছ থেকে শর্তসাপেক্ষে অনুমতি পাওয়ার পরই শুক্রবার (২৫ এপ্রিল, ২০২৫) মুর্শিদাবাদ যান শুভেন্দু। উপদ্রুত এলাকা ঘুরে দেখেন তিনি। কথা বলেন সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে। এর পাশাপাশি তিনি হিংসার বলি - বাবা ও ছেলে - হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাসের বাড়িতেও যান।সম্পর্কে বাবা ও ছেলে হলেও হরগোবিন্দ ও চন্দনের পরিবার আলাদা। সংবাদমাধ্যমের হাতে আসা তথ্য অনুসারে - দু'টি পরিবারকেই ১০ লক্ষ টাকার একটি করে চেক দেন শুভেন্দু। স্বজনহারারা সেই সাহায্য গ্রহণ করেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'আমাকে ওঁরা গ্রহণ করেছেন। আমি কৃতজ্ঞ।' এছাড়াও, উপদ্রুত এলাকার একটি গ্রামের মন্দিরে বিগ্রহ দান করেছেন শুভেন্দু।প্রসঙ্গত, সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে সম্প্রতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদের নানা অংশ। বিরোধিতার নামে দেদার হিংসা ছড়ায় উন্মত্ত একদল জনতা। সেই হিংসার বলি হতে হয় তিনজনকে। রাতারাতি ভিটে ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন কয়েকশো মানুষ। বর্তমানে সেখানকার পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এলেও রাজনীতির কারবারিদের আনাগোনা লেগেই আছে।অন্যদিকে, মুর্শিদাবাদের উপদ্রুত এলাকা ঘুরে গিয়েছে জাতীয় মহিলা কমিশন ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিদল। জাতীয় মহিলা কমিশন তার রিপোর্টে এই গোটা ঘটনায় পুলিশের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেছে। তাদের দাবি, বহু ক্ষেত্রে প্রয়োজনের সময় আক্রান্তরা পুলিশকে পাশে পাননি। কিছু ক্ষেত্রে পুলিশ অনেক দেরিতে এসেছে। তাই এলাকাবাসীর পুলিশের উপর আর কোনও ভরসা নেই।বস্তুত, শুক্রবার যখন এলাকায় শুভেন্দু অধিকারী যান, তাঁর সামনেও ফের একবার এলাকায় স্থায়ী বিএসএফ ক্যাম্প তৈরির দাবি তোলা হয় স্থানীয়দের তরফে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে গ্রামবাসীকে শুভেন্দু আশ্বস্ত করেন। তিনি জানিয়েছেন, ওয়াকফ হিংসায় যাঁদের দোকান ধ্বংস হয়েছে, টোটো নষ্ট করা হয়েছে, সেইসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও অসংগঠিত পরিবহণকর্মীকেেও আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হবে তাঁদের তরফে।