পহেলগাঁও হামলার কয়েকদিন আগেই কাশ্মীর বেড়াতে গিয়েছিলেন শোয়েব ইব্রাহিম ও দীপিকা কক্কর। জঙ্গি হানার পর তাই দীপিকা ও শোয়েবকে নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন অনুরাগীরা। চিন্তা ছিল, 'শোয়েব-দীপিকা নিরাপদে আছেন তো?' তবে পরে শোয়েব ইনস্টাস্টোরি পোস্ট করে জানান, তাঁরা দুজনেই নিরাপদ রয়েছেন, ঘটনার আগেই তাঁরা দিল্লিও চলে এসেছেন, একই সঙ্গে জানান, তাঁরা শীঘ্রই নতুন ভ্লগও পোস্ট করবেন।
তবে শোয়েবের এমন কথাতেই বিরক্ত হয়ে যান অনুরাগীরা। জঙ্গি হানার ঘটনার মধ্যেই কীভাবে নতুন ভ্লগ আনার কথা ভাবতে পারেন শোয়েব! তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকেই। বিষয়টি নিয়ে অনেকে ট্রোলও করতে শুরু করেন। আর ট্রোলিং-এর মুখেই এবার পহেলগাঁও জঙ্গি হামলা ও ট্রোলিং নিয়ে মুখ খুললেন অভিনেতা শোয়েব ইব্রাহিম।
ঠিক কী বলেছেন শোয়েব ইব্রাহিম?
পহেলগাঁও হামলা ও ভ্লগ প্রসঙ্গে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে শোয়েব ইব্রাহিম বলেন যে তিনি ২৬শে এপ্রিল সেটা শুট করছেন। তাঁর কথায়, ‘গত ৩-৪ দিন ধরে আমি কোনও ভ্লগ দিইনি এবং সেটা কেন দিইনি তা আপনারা সবাই জানেন। এরপর শোয়েব বলেন, ’আমরা সেই জায়গায় ছিলাম, সেখানকার সৌন্দর্য, সেখানকার মানুষ এবং সেখানকার প্রকৃতি সহ আরও নানান কিছু দেখে এসেছি। আপনারা জানেন, বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে, যে কোনও কোণে যদি কোনও সন্ত্রাসী হামলা হয়, তাহলে সবচেয়ে বেশি মাথা নত হয় মানবতার এবং তার থেকেও বেশি মাথা নত হয় একজন মুসলমানের। যেমন আমার, আমি অন্যদের থেকে দুগুণ বেশি লজ্জিত যে জঙ্গিরা (terrorists)-রা ধর্ম জিজ্ঞাসা করে মেরেছে, আর ওরা নামে মুসলিম ছিল, যদিও আমি ওদের মুসলমান মনে করি না, আমি ওদের মানুষই মনে করি না।'
সরকারের কাছে সন্ত্রাসবাদীদের শাস্তি দেওয়ার দাবি
শোয়েব ইব্রাহিম সরকারের কাছে জঙ্গিদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। তিনি বলেন ‘তারা এই দেশের হোক বা অন্য দেশের, যে হামলায় জড়িতদের,এমন শাস্তি দেওয়া উচিত যাতে তাদের আত্মা কেঁপে ওঠে।’ শোয়েব মনে করেন ‘এদের জীবিত ধরে এনে রাস্তায় ফাঁসি দেওয়া উচিত, ওদের চামড়া তুলে নেওয়া উচিত। শোয়েব বলেছেন যে কোনও ধর্মই ভুল নয়, মানুষই আসলে ভুল।’
'পাকিস্তান চলে যাও' মন্তব্যের জবাব
শোয়েবের কথায়, ‘কিছু জঙ্গির কারণে পুরো জাতিকে টার্গেট করা হচ্ছে, অনেক লোকজন আমাকে বলছে যে পাকিস্তানে চলে যাও, কিন্তু কেন পাকিস্তানে যাব? আমার পূর্বপূরুষ বাবা, দাদু রা এই জমি বেছে নিয়েছে। আমরা এই জমিকে সজদা (ভালোবাসি) করি এবং এই জমিতেই দফন (মরব) করব।’
ট্রোলিং নিয়ে শোয়েব ইব্রাহিম কী বললেন
অন্যদিকে, কাশ্মীর নিয়ে ইনস্টাস্টোরি পোস্ট করার কারণে হওয়া ট্রোলিং নিয়ে শোয়েব বলেছেন যে তিনি ২২শে এপ্রিল বিমানে শ্রীনগর থেকে দিল্লি ফেরেন। তখন তিনি এই ঘটনার বিষয়ে জানতেন না। বিমানবন্দরে ফোন অন করার সঙ্গে সঙ্গেই অনেক লোক মেসেজ করে জানতে চান যে তারা নিরাপদে আছেন কিনা। এরপর তিনি হোটেলে গিয়ে পুরো বিষয়টি জানতে পারেন। তখন নিউজে দুই-তিন জনের আহত হওয়ার খবর আসছিল। সেকারণে তিনি স্টোরি পোস্ট করেন যে তাঁরা ঠিক আছেন এবং নতুন ভ্লগ শীঘ্রই আসবে। তিনি জানান, যে তাঁর নিজের ভ্লগের প্রচার করার কোনও উদ্দেশ্য ছিল না।
শোয়েবের কথায়, যদি আমরা নতুন ভ্লগ দিতামও তাহলেও আপনারাই আমাকে বলুন যে শুধু আমাকে আর দীপিকাকেই কেন টার্গেট করা হচ্ছে। বাকি ভ্লগার (vlogger)-রাও তো রোজ তাঁদের ভ্লগ দিচ্ছেন। সিনেমার প্রচার হচ্ছে এবং আপনারাও তো নিজেদের জীবন কাটাচ্ছেন, তাহলে?'