দুর্গাপুজো শেষ হয়ে গেলেও কোনও দুঃখ নেই আলিপুরদুয়ারের সাহা বাড়ির সদস্যদের মনে। কারণ? কারণ এই বাড়িতে ৭ দিন ধরে পূজিত হন মা লক্ষ্মী। ঐতিহ্যবাহী এই পুজোটি শুরু হয়েছিল পূর্ব বাংলাদেশে, দেশভাগের পর থেকে হ্যামিল্টনগঞ্জের শ্যামাপ্রসাদ কলোনির সাহা বাড়িতে প্রতি বছর ঐতিহ্যবাহী এই পুজোর আয়োজন করা হয়।
একসময় এই সাহা বাড়ির লক্ষ্মী পুজোয় টানা ৭ দিন ধরে চলত কবিগান, পালাগান। যদিও এখন সে সব অতীত। তবে ঐতিহ্য মেনে এখনও ৭ দিন ধরে চলে লক্ষ্মী পুজো। তবে শুধু পুজোর আয়োজনে নয়, মা লক্ষ্মীর আকৃতি এবং সাজসজ্জাতে থাকে আলাদা আকর্ষণ।
(আরও পড়ুন: বিছানায় কী পরে শুতে যান ট্রাম্প? মজার উত্তর দিলেন স্ত্রী মেলানিয়া)
সাহা বাড়ির এই লক্ষ্মী প্রতিমা হয় ১১ ফুট লম্বা। পুজোয় ব্যবহৃত পদ্ম ফুল থেকে ধানের শিশ সব কিছুই হয় সোনার। এছাড়া প্রসাদ হিসেবে নিবেদন করা হয় ৫০ রকমের খাদ্য সামগ্রী। মায়ের পরনেও থাকে একাধিক সোনার অলংকার। আলিপুরদুয়ারের এই ঐতিহ্যবাহী পুজো দেখতে দূর দূরান্ত থেকে মানুষ এসে ভিড় করেন।
এই পুজোর আরও একটি বিশেষত্ব হলো, ষাটের দশকে যখন এই লক্ষ্মীপুজোর আয়োজন হতো, তখন আরতি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হতো সাহা বাড়িতে। সেই প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের দেওয়া হতো সোনার পদক। এখনও আরতি প্রতিযোগিতা হয় ঠিকই, কিন্তু সোনার পদক আর দেওয়া হয় না। বদলে দেওয়া হয় অন্য পুরস্কার। তবে এই প্রতিযোগিতা এবং পুজোর আনন্দ কোথাও যেন ম্লান করে দেয় দুর্গাপুজো শেষ হয়ে যাওয়ার দুঃখকে।
(আরও পড়ুন: ভারতীয় ছেলেরা প্রেমিক হিসাবে কেমন? অস্ট্রেলিয়ান তরুণীর মজার অভিজ্ঞতা)
সাহা বাড়ির এক সদস্যের মতে, এই পুজো শুরু হয় বাংলাদেশের ঢাকায়। সাহা বাড়ির পূর্বপুরুষ হরচন্দ্র সাহার হাত ধরেই শুরু হয় পুজো। পরবর্তীকালে দেশভাগের সময় বাড়ির সদস্যরা চলে আসে ভারতে। বংশ পরম্পরায় এই পুজোর হাল ধরে পরিবারের উত্তরাধিকারীরা। এই ভাবেই বছরের পর বছর ৭ দিন ব্যাপী এই লক্ষ্মীপুজো চলছে সাহা বাড়িতে।