২০১৩ সালে ওয়াকফ আইন সংশোধিত হওয়ার পর দেশজুড়ে ওয়াকফ বোর্ডগুলির অধীনে থাকা জমির পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ১১৬ শতাংশ। শীর্ষ আদালতে এই তথ্য পেশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাদের আরও দাবি, বহু ক্ষেত্রে ওয়াকফ আইনের 'অপব্যবহার' করা হয়েছে কেবলমাত্র ব্যক্তিগত ও সরকারি সম্পত্তি দখল করার জন্য।
সংশোধিত ওয়াকফ আইন ২০২৫-এর বিরোধিতা করে শীর্ষ আদালত যেসমস্ত মামলা রুজু করা হয়েছে, তার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার একটি পালটা হলফনামা আদালতে জমা করেছে। তাতে জানানো হয়েছে, সেই সময় পর্যন্ত শেষ পাওয়া তথ্য অনুসারে - সারা দেশে ওয়াকফ বোর্ডগুলির অধীনে সম্পত্তি আছে ৮,৭২,৮৭০টি। যার মধ্যে জমির পরিমাণ হল - ৩৯,০২,৪৭৬.৩৫৬ একর।
এরই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার আদালতকে জানিয়াছেন, 'এটা শকিং যে - ২০১৩ সালে ওয়াকফ আইন সংশোধন করার পর তাদের সম্পত্তি এলাকার (জমির পরিমাণ) পরিমাণ ১১৬ শতাংশ বেড়েছে!'
'অন্যভাবে বলতে গেলে, বলা যায় - ২০১৩ সাল পর্যন্ত (এর মধ্যে রয়েছে - মুঘল যুগ, স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময় এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সময়) ওয়াকফ জমির পরিমাণ ছিল - ১৮,২৯,১৬৩.৮৯৬ একর। কিন্তু, যেটা অত্যন্ত শকিং, তা হল - ২০১৩ সালের পর মাত্র ১১ বছরে ওয়াকফ ল্যান্ডের অধীনে আরও ২০,৯২,০৭২.৫৬৩ একর জমি যুক্ত হয়েছে।' এর ফলে মোট জমির পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ৩৯ লক্ষ একরেরও বেশি!
২০১৩ সাল পর্যন্ত জম্মু ও কাশ্মীর ওয়াকফ বোর্ডের অধীনে জমি ছিল - ০.৪১৯৯ একর। তারপর আরও ৩২,৫৩২টি সম্পত্তি যুক্ত করা হয়েছে। ফলে জমির পরিমাণ বেড়ে হয়েছে - ৩১,৪০৫.৫৩০৭৫ একর।
ঝাড়খণ্ড রাজ্য (সুন্নি) ওয়াকফ বোর্ডের অধীনে ২০১৩ সাল পর্যন্ত কোনও সম্পত্তিই ছিল না। কিন্তু, তারপরই ৬৯৮টি সম্পত্তি তাদের দখলে চলে আসে। যার জমির পরিমাণ ১,০৮৫.১৬২৮৪ একর।
২০১৩ সালের আগে পর্যন্ত সবথেকে বেশি ওয়াকফ সম্পত্তি ছিল তামিলনাড়ুতে। যার পরিমাণ ছিল - ৪৩,৬২৩টি। কেরালার হাতে ওই সময় পর্যন্ত ছিল ২৩,০৯২টি ওয়াকফ সম্পত্তি। ২০১৩ সালের পর যুক্ত হয় আরও ৩০,৩০৩টি সম্পত্তি। ফলত - মোট জমির পরিমাণ বেড়ে হয় - ৩৬,৯৯৫.৪৭২৪৮ একর।
২০১৩ সাল পর্যন্ত দিল্লি ওয়াকফ বোর্ডের অধীনে ছিল মাত্র ন'টি সম্পত্তি। যাতে জমির পরিমাণ ছিল - ০.০৩৬৯৮ একর। ২০১৩ সালের পর যুক্ত হয় আরও ১,০৩৮টি সম্পত্তি। জমির পরিমাণ বেড়ে হয় ২৮.০৪৮৮৯ একর।
সারা ভারতের নিরিখে হিসাব করলে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ছিল ২,০৭,৩৯৪টি ওয়াকফ সম্পত্তি। ২০১৪ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে তাতে যুক্ত হয়েছে আরও ৬,৬৫,৪৭৬টি সম্পত্তি। অর্থাৎ - সম্পত্তির সংখ্যা বৃদ্ধির পরিমাণ প্রায় ৩২০.৯ শতাংশ।