সিন্ধু জল বন্টন নিয়ে পাকিস্তানের আর্জি খারিজ করল ভারত। পরিকল্পনা মাফিকই পাকাল দুল ও লোয়ার কালনাই হাইড্রোইলেকট্রলিক প্ল্যান্ট তৈরি হবে। নয়াদিল্লিতে দুই দিনের বৈঠকের শেষে পাকিস্তানকে স্পষ্ট জানিয়ে দিল ভারত।
১৯৬০ সালের সিন্ধু জল বন্টন চুক্তি মেনেই তৈরি হবে দুটি জলবিদ্যুত্ প্রকল্প। তাই পাকিস্তানের আপত্তি থাকার কোনও মানেই হয় না। বুধবার পাকিস্তানকে এমনটাই জানিয়েছেন ভারতের প্রতিনিধিরা।
গত মঙ্গলবার প্রায় আড়াই বছর পর এ বিষয়ে আলোচনায় বসে ভারত-পাকিস্তান। চন্দ্রভাগার উপনদীতে পাকাল দুল ও লোয়ার কালনাই প্রকল্প নিয়ে শুরু থেকে আপত্তি পাকিস্তানের। তাদের দাবি, এই দুটি প্রকল্প সিন্ধু জল চুক্তির বিরোধী।
সিন্ধু জল চুক্তি অনুযায়ী পাকিস্তান সিন্ধু, বিতস্তা ও চন্দ্রভাগা নদীর জল ব্যবহার করে। অন্যদিকে বিপাশা, ইরাবতী ও শতদ্রু নদীর জল ব্যবহার করে ভারত।

তবে, এ ক্ষেত্রে পাকিস্তানে চন্দ্রভাগা নদীর জল পেতে কোনও সমস্যা হবে না বলেই জানিয়েছে ভারত। বিদেশমন্ত্রকের নথি অনুযায়ী, 'পাকাল দুল ও লোয়ার কালনাই প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দুটিই ক্ষেত্রেই যে সিন্ধু জল চুক্তি লঙ্ঘণ করা হচ্ছে না তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন ভারতীয় প্রতিনিধিরা। টেকনিকাল তথ্য দিয়ে বোঝানো হয়েছে।'
চন্দ্রভাগার উপনদী মারুসদর নদীতে হবে পাকাল দুল প্রকল্প। অন্যদিকে লোয়ার কালনাই প্রকল্পও চন্দ্রভাগার আরেক উপনদীতে তৈরি হবে।
ভারতের আশ্বাস পাওয়ার পর বাঁধ সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য জানতে চান পাকিস্তানের প্রতিনিধিরা। এর ফলে যাতে পাকিস্তানে চন্দ্রভাগার জল প্রবাহ না কমে তা নিশ্চিত করতে চান তাঁরা।এর প্রত্যুত্তরে ভারতীয় প্রতিনিধিরা বলেন, 'চুক্তি অনুসারে ঠিক সময় ও প্রয়োজন মতো সমস্ত তথ্যই দেওয়া হবে।'
ভারতের সিন্ধু ওয়াটার কমিশনার প্রদীপ কুমার সাক্সেনা ও পাকিস্তানের প্রতিনিধি মেহর আলি এই বৈঠকে দুই দেশের হয়ে আলোচনা করেন। বৈঠক শেষে আলোচনার মাধ্যমে আরও দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দুই দেশের প্রতিনিধিই।
দুই বছর আগে পুলওয়ামা হামলার ঠিক পরেই সিন্ধু জল বন্টন নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের আলোচনা বন্ধ হয়ে যায়। তাছাড়া গত বছর করোনা পরিস্থিতির জেরে বৈঠকের আয়োজন করা হয়নি। বর্তমানে পারস্পরিক সহযোগিতার সিদ্ধান্তের পর আবারও এ বিষয়ে শুরু হল আলোচনা। যদিও সিন্দু জল চুক্তি অনুযায়ী প্রতিবছরেই দুই দেশের প্রতিনিধিদের বৈঠকে বসার কথা।