পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক কূটনৈতিক পদক্ষেপ করেছে ভারত। নিজের মতো তার একটা জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেছে পাকিস্তানও। যার মধ্যে অন্যতম হল, ভারতীয় অসামরিক বিমানগুলিকে পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করতে না দেওয়া।ঘটনা হল, পাকিস্তানের এটা করার উদ্দেশ্য ছিল, উড়ানের খরচ ও সময় বাড়িয়ে ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলিকে বিপাকে ফেলা। এবং সেই পরিকল্পনা যে একেবারে ভ্রান্ত, তেমনটা নয়। কিন্তু, তার সঙ্গে এটাও সত্যি যে ইসলামাবাদের এই সিদ্ধান্তের ফলে ভারতের যেমন কিছু সমস্যা হবে, তেমনই প্রতিদিন কোটি কোটি ডলার রোজগারের সুযোগ হারাবে পাকিস্তানও।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমনিতেই পাকিস্তানের হাঁড়ির হাল! তাই কোনও দেশ যখন তাদের আকাশসীমা ব্যবহার করে অসামরিক বিমান চালায়, তখন তার ভাড়াবাবদ (ওভারফ্লাইট রাজস্ব) ভালোই লক্ষ্মীলাভ হয় পাক প্রশাসনের। কিন্তু, এখন আর ভারত পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করছে না। ফলে, আখেরে পাকিস্তানেরই বিরাট অঙ্কের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলার পরও ঠিক একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সেই সময়কার বিভিন্ন হিসাব যদি একটু তুলে ধরা যায়, তাহলেই বোঝা যাবে, পাকিস্তান এক্ষেত্রেও আসলে আত্মঘাতী গোলই করেছে।যেমন - একটি তথ্য বলছে, পাকিস্তান তার আকাশসীমায় ভারতীয় বিমান চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার পর, ২০১৯ সালের জুলাই মাসে তাদের ক্ষতি হয়েছিল প্রায় ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সেই সময়ে গড়ে প্রতিদিন ৪০০টি উড়ান এই সিদ্ধান্তের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল। তার ফলে পাকিস্তানের সিভিল এভিয়েশন অথরিটি (সিএএ) এবং সেদেশের জাতীয় বিমান সংস্থা - পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স (পিআইএ)-কে বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছিল।অন্যদিকে, ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলিরও রক্ষণাবেক্ষণ, জ্বালানী এবং সামগ্রিকভাবে যাত্রার খরচ বেশ খানিকটা বেড়েছিল। বেড়ে গিয়েছিল বিমানকর্মীদের কাজ করার সময়সীমাও। আরও একটি তথ্য বলছে, এই একই কারণে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে জুন মাসের মধ্যে পাকিস্তানের প্রতিদিন গড়ে ৫,৩২,০০০ মার্কিন ডলারের ক্ষতি হয়েছিল।সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, এবারও একইরকমের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে পাকিস্তানকে। আনুমানিক হিসাব অনুসারে, এই সিদ্ধান্তের ফলে পিআইএ-কে প্রতিদিন অন্তত ৪,৬০,০০০ মার্কিন ডলারের ক্ষতি স্বীকার করতে হচ্ছে। এর সঙ্গে যদি সিএএ-র ক্ষতির পরিমাণ জুড়ে দেওয়া হয়, তাহলে দৈনিক আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ হবে প্রায় ৭,৬০,০০০ মার্কিন ডলার। সেখানে ভারতের দৈনিক ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৩,০০,০০০ মার্কিন ডলার।