চট্টগ্রামে বাড়ি থেকে এক হিন্দু যুবককে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধরের অভিযোগ মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে। আক্রান্ত যুবকের নাম প্রান্ত তালুকদার। জানা গিয়েছে, তাঁর ফেসবুক পোস্ট নিয়ে আপত্তি থাকার জেরে এই কাণ্ড ঘটায় একদল মৌলবাদী। প্রান্তকে তাঁর পরিবারের সামনে থেকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রান্তের অপহরণের দৃশ্য পাড়ার একটি সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। পরে প্রান্তকে উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে এই ঘটনায় কাউকে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি। (আরও পড়ুন: এটাই কি বৈষম্য বিরোধিতার নমুনা? BCS থেকে হিন্দুদের নাম বাদে প্রশ্ন বাংলাদেশে)
আরও পড়ুন: হাসিনাকে না পেলে ভারতের সাথে সম্পর্কে ছিন্ন? 'অন্য স্বার্থ' মনে পড়তেই ঢাকা বলল…
রিপোর্ট অনুযায়ী, বুধবার রাত ১১টা নাগাদ চট্টগ্রা শহরের খুলশি থানা এলাকার লালখান বাজার থেকে প্রান্ত তালুকদারকে উদ্ধার করা হয়। এই নিয়ে খুলশি থানার ওসি মুজিবুর রহমান জানান, গোপন সূত্রে পুলিশ খবর পায় যে লালখান বাজারে অবস্থিত আমিন সেন্টারের পার্কিংয়ে কিছু লোক এক যুবককে ঘিরে রয়েছে। এই খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সেখান থেকেই প্রান্ত তালুকদারকে উদ্ধার করা হয়। জানা যায়, মারধরের জেরে প্রান্ত গুরুতর জখম হয়েছেন। এই আবহে পুলিশই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করে। এদিকে প্রান্তকে কেন মারধর করা হয়েছিল, সেই বিষয়ে ওসি সরাসরি কিছু বলেননি। (আরও পড়ুন: টেসলার গাড়ি করে ট্রাম্প হোটেলে নাশকতার ছক? ভেগাসে বিস্ফোরণ নিয়ে বিস্ফোরক মাস্ক!)
আরও পড়ুন: আত্মসমর্পণ কিষেণজির ভাতৃবধূ বিমলার, ১৮ পুলিশকে খুনের অভিযোগ মাওবাদী নেত্রীর নামে
তবে অভিযোগ, চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর পক্ষে ফেসবুকে লিখেছিলেন প্রান্ত। আর তার জেরেই নাকি তাঁর ওপর এই হামলা। প্রান্ত তালুকদারের বাড়ি পতেঙ্গা কাঠগড় এলাকায়। সেখান দিয়ে প্রান্তকে জোর করে তুলে নিয়ে যায় মৌলবাদীরা। সেই ঘটনার ভিডিয়ো মুহূর্ত ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। এরপরই পুলিশ তদন্তে নামে। এরই মাঝে খুলশি থানায় প্রান্তকে মারধরের খবর যায়। প্রসঙ্গত, আজ চট্টগ্রাম আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর জামিন মামলার শুনানি হওয়ার কথা। (আরও পড়ুন: চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনের শুনানি কি আজ আদৌ হবে চট্টগ্রাম আদালতে? জল্পনা তুঙ্গে)
প্রসঙ্গত, গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে সমাবেশ করেছিল বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ। সেই সমাবেশে ভাষণ দিয়েছিলেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুও। সেই সমাবেশেই নাকি তিনি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছিলেন। এই অভিযোগেই চট্টগ্রামে একটি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন বিএনপি নেতা ফিরোজ খান। গত ৩১ অক্টোবর চিন্ময় দাস-সহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন সেই নেতা। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই গত ২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুকে গ্রেফতার করে ঢাকা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। এরপর তাঁকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের আদালতে বাইরে হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকে জড়ো হয়েছিলেন চিন্ময় প্রভুর গ্রেফতারির প্রতিবাদ জানাতে। সেই জনতার ওপর নির্বিচারে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে এই সংঘর্ষে সাইফুল ইসলাম নামে এক আইনজীবী খুন হন। সেই খুনের ঘটনায় অন্তত ১০ জন হিন্দুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এদিকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের হয়ে কোনও আইনজীবী যাতে মামলা না লড়েন, তার জন্যে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।