শিলিগুড়ি কলেজে সোশ্যাল অনুষ্ঠানের মধ্যেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদ দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল এলাকা। দু'পক্ষ রাতেই মেয়র গৌতম দেবের বাড়ির সামনে যায় অভিযোগ জানাতে। সেই ঘটনায় এবার কড়া পদক্ষেপ করল জেলা তৃণমূল কংগ্রেস। দলের ছাত্র পরিষদের জেলা সহ-সভাপতি সৌরভ ভাস্কর-সহ চারজনকে শোকজ করলেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। একইসঙ্গে শিলিগুড়ি কমার্স কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ইউনিট কমিটি ভেঙে দেওয়া হল।
আরও পড়ুন: গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলেই অনেক কেন্দ্রে খারাপ ফল, মমতাকে জানিয়েছেন অভিষেক-রিপোর্ট
জানা গিয়েছে, সোমবার পর্যন্ত এই ইউনিটের দায়িত্বে ছিলেন সৌরভ ভাস্কর। ঘটনার পর মঙ্গলবার বিকেলে দার্জিলিং জেলা তৃণমূল সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ জেলা কার্যালয়ে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব, ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার প্রমুখ নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন। সেই বৈঠকেই এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। এদিন বৈঠক শেষে পাপিয়া এই ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলেন।
তিনি জানান, রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে সৌরভ ভাস্কর, রুস্তম আলম, আফজার আলি ও কুন্দন পাসোয়ানকে শোকজ করা হয়েছে। এছাড়াও, কমার্স কলেজের ইউনিট কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, কলেজের সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি তনয় তালুকদারকে। যদিও সৌরভ জানিয়েছেন, তিনি এখনও পর্যন্ত শোকজের চিঠি পাননি। তিনি এ বিষয়ে জানেন না।
উল্লেখ্য, সোমবার রাতের ওই ঘটনার পরেই মারামারির সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের বিষয়ে পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেন মেয়র। এছাড়াও, ঘটনায় শিলিগুড়ি থানায় চারজনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। যদিও পুলিশ ঘটনার বহু ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও কাউকে গ্রেফতার করেনি।
এবিষয়ে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (পূর্ব) রাকেশ সিং জানিয়েছেন, ঘটনায় তদন্ত চলেছে। আইন মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদিও ঘটনার আগেই মেয়র জানিয়েছিলেন, তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
উল্লেখ্য, কলেজে সোশ্যাল অনুষ্ঠানের মাঝেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে প্রবল হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। আচমকা গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে কলেজ চত্বরে ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। রাত বাড়তেই মেয়রের বাড়ির সামনে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের একাধিক নেতা ও কর্মী জমায়েত হন এবং শুরু হয় বিক্ষোভ। আচমকা এত ভিড় দেখে রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন মেয়র গৌতম দেব। এই ঘটনায় শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের অন্দরেই ভাঙন ও অসন্তোষের ছবি আবারও প্রকাশ্যে আসে। এর ফলে অস্বস্তিতে পড়তে হয় তৃণমূল কংগ্রেসকে। আর এবার করা পদক্ষেপ করল শাসক দল।