আজ প্রকাশিত হল মাধ্যমিকের ফলাফল। তাতে প্রথম হয়েছে রায়গঞ্জের অদৃত সরকার। রায়গঞ্জ করোনেশন হাইস্কুলের ছাত্র অদৃত ৭০০- এর মধ্যে পেয়েছে ৬৯৬ নম্বর। তাঁর কথায়, ‘মাধ্যমিকে ভালো ফল হবে সেই আশা ছিল। প্রথম দশে থাকব সেটা আশা ছিল। কিন্তু, প্রথম হব এতটা আশা করিনি।’ এই ফলাফল অত্যন্ত অপ্রত্যাশিত বলে জানায় অদৃত। মাধ্যমিকের ফলাফল জানার পরেই খুশিতে সে কেঁদে ফেলে। আগামিদিনে চিকিৎসক হওয়ায় তাঁর লক্ষ্য। তবে অন্য কোনও বিষয়ে আগ্রহ বাড়লে সেই বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করবে বলে জানিয়েছে অদৃত।
আরও পড়ুন: মোট পাশের হার ৮৬.৫৬ শতাংশ, নিজের মাধ্যমিকের রেজাল্ট দেখতে ক্লিক করো এখানে
বরাবরই পড়াশোনায় ভালো অদৃত। পরিবারের সদস্যদের কথায়, তাকে কোনওদিনই পড়াশোনার জন্য বলতে হয়নি। বই পড়তে সে খুব ভালবাসে। বিষয় নিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি অন্য বিষয়েও বই পড়তে সে ভালোবাসে। তবে খেলাধূলায় অবশ্য তেমন কোনও আগ্রহ নেই অদৃতের। সম্প্রতি জেলাস্তরে একটি কুইজ প্রতিযোগিতায় অদৃত জয়ী হয়েছিল। যদিও কোন বিষয়ে সে কত নম্বর পেয়েছে? তা এখনও জানতে পারেনি। তবে বিজ্ঞান পড়তে বেশি ভালোবাসে অদৃত। বায়োলজি তার প্রিয় বিষয়। পড়াশোনার পাশাপাশি সাহিত্যের প্রতিও তার টান রয়েছে। বই পড়া বাদ দিয়ে অন্য সময়ে সাহিত্যের অন্যান্য বই সে পড়েছে। নিজের প্রথম হওয়ার ঘটনায় অত্যন্ত আপ্লিত অদৃত।
শুক্রবার সকাল ৯টায় মাধ্যমিক ফলাফল প্রকাশের জন্য যখন সাংবাদিক বৈঠক শুরু করেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় তখন থেকেই অদৃতের বাড়িতে ছিল টান-টান উত্তেজনা। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি অদৃতের নাম ঘোষণার পরেই বাড়ির সকলেই খুশি হন।
অদৃতের বাবা তথা অবসরপ্রাপ্ত কর্মী অমিত কুমার সরকার বলেন, ছেলের এই ফলাফলে তিনি খুবই খুশি হয়েছেন। রায়গঞ্জের নাম উজ্জ্বল করল তাঁর ছেলে। মা সীমা সরকার একজন গৃহবধূ। ছেলের সাফল্যের আনন্দে তিনি কিছু বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না।
অদৃত জানায়, প্রথম হওয়ার পরেই তার বাড়িতে একের পর এক ফোন এসে যাচ্ছে। অনেকেই উপহার দিয়ে যাচ্ছেন বাড়ি এসে। পরিবারের লোকজন তাকে মিষ্টিমুখ করিয়েছেন। ভবিষ্যত পরিকল্পনার বিষয়ে অদৃত জানায়, মেডিক্যাল নিয়ে তার পড়াশোনার ইচ্ছে রয়েছে। অন্য বিষয়ে আগামিদিনে আগ্রহ তৈরি হলে তা পড়াশোনার কথা ভাববে। অদৃত জানায়, তার ভালো ফলাফলের জন্য অবদান রয়েছে মা-বাবা ও দিদির। স্কুলের শিক্ষকদেরও অত্যন্ত কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন অদৃত।
অদৃত আরও জানায়, বাধা ধরা নিয়ম মেনে পড়াশোনায় সে বিশ্বাসী নয়। যে কোনও সময়ে যেটা ইচ্ছে সেটা নিয়েই পড়াশোনা করেছে। শিক্ষকদের সাহায্য না পেলে এত ভালো ফল সম্ভব নয় বলে জানায় অদৃত।
উল্লেখ্য, শুক্রবার মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলন করে মাধ্যমিকের ফলাফল ঘোষণা করেন। এবছরের মাধ্যমিকের পরীক্ষা হয়েছিল ১০ ফেব্রুয়ারি। পরীক্ষা শেষে ৭০ দিনের মাথায় ফল প্রকাশ হয়। মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৯ লক্ষ ৮৪ হাজার ৭৫৩ জন। এবছর মাধ্যমিকের পাশের হার ৮৬.৫৭ শতাংশ। মেধাতালিকায় প্রথম দশে রয়েছেন ৬৬ জন। পাশের হারে শীর্ষে প্রথম পূর্ব মেদিনীপুর, দ্বিতীয় স্থানে কালিম্পং এবং তৃতীয় স্থানে কলকাতা।