আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করার অভিযোগ উঠেছে। আর এই ঘটনার তদন্তের মোড় ঘোরাতে কি তথ্যপ্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করা হচ্ছে? এই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন অনেকেই। এবার একইরকম অভিযোগের সুর শোনা গেল রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের গলায়। তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ–খুনে কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রাজ্যপাল। আজ, শুক্রবার কলকাতার রাজপথে মিছিল করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তখনই তাঁকে আক্রমণ করে বসলেন রাজ্যপাল। সুতরাং আবার রাজ্য–রাজনীতিতে তৈরি হল সংঘাতের আবহ। যা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
এদিকে আজকে ডোরিনা ক্রসিংয়ের মঞ্চ থেকে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে পাল্টা নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘এখানে আছেন আপনাদের রাজা যিনি বড় বড় কথা বলছেন ইদানিং। অথচ হাথরাস, উন্নাও, বিলকিস বানোর অত্যাচার নিয়ে কোনও কথা বলেন না। আবার বলে রিপোর্ট পাইনি। তোমাদের রাজা তো এখানে বসে আছে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য। তিনি দেননি। আমাদের রাজার ভবনে (রাজভবনে) মহিলা কর্মচারী নিগৃহীত হলেও এরা প্রতিবাদ করে না।’ আর রাজ্যপাল আজ সংবাদসংস্থা এএনআই–কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকার বলেছেন, ‘আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে যাই হোক না কেন তা অত্যন্ত লজ্জাজনক। সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ। তথ্যপ্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করা হয়েছে। ওই তরুণী চিকিৎসক আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করে তদন্তের মোড় ঘোরানোর চেষ্টাও হয়েছে।’
অন্যদিকে এখন এই মামলা তদন্ত করছে সিবিআই। তাঁদেরকে রবিবার পর্যন্ত ডেডলাইন দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। কারণ তাঁর দাবি একটাই, দোষীর ফাঁসি চাই। রাজ্যপাল এই ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে বলেন, ‘জেকিল এবং হাইডের মতো আচরণ করছেন। আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় মুখ্য়মন্ত্রীকে দীর্ঘ চিঠি লিখেছিলাম। পদক্ষেপ করার পরামর্শ দিয়েছিলাম। সংবিধানের ১৬৭ ধারায় রিপোর্টও চেয়েছিলাম। গত পাঁচ বছরে এমন ৩০ চিঠি পাঠিয়েছি। কোনও উত্তর পাইনি। এটা অসাংবিধানিক। মুখ্যমন্ত্রী বলছেন অভিযুক্ত ফাঁসি দাও এবং তারপর বিচার চলুক। মুখ্য়মন্ত্রী জেকিল এবং হাইডের মতো আচরণ করছেন।’
আরও পড়ুন: ‘অনিতা দেওয়ান–তাপসী মালিক গণধর্ষণ কার আমলে’, মমতার প্রশ্নের উত্তর দিল জনগণ
এছাড়া বৃহস্পতিবার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে যান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তাঁর কথায়, ‘আমি হাসপাতালে গিয়ে দেখেছি আন্দোলনকারীরা সুবিচারের দাবিতে সরব হয়েছেন। প্রায় প্রত্যেকে তাঁদের পাশে আছে। আমাদের উচিত তাঁদের সুবিচার পাওয়ার ব্যবস্থা করা। এই মামলা অবশ্যই পুলিশের ব্য়র্থতা আছে। মানুষের মনে সন্দেহ জাগছে, কে পুলিশ আর কে চোর? পুলিশ যেভাবে তদন্ত করেছে, তাতে আমি সন্তুষ্ট নই।’