ত্রিপুরায় বিএসএফ এবং পাচারকারীদের সংঘর্ষে এক বাংলাদেশির মৃত্যুর ঘটনায় মুখ খুললেন সেদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মহম্মদ জাহাঙ্গির আলম চৌধুরী। শনিবার তাঁর উপস্থিতিতেই বিজিবি প্রধান কার্যত মেনে নিয়েছিলেন যে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে তাঁর বাহিনী ব্যর্থ। তা সত্ত্বেও তিনি ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। এই ইস্যুতে উপদেষ্টা জাহাঙ্গির বললেন, 'আমরা চেষ্টা করছি যাতে এই ঘটনাগুলি না ঘটে।' (আরও পড়ুন: ‘শিক্ষিত হলে গাড়ি চাপা পড়ার পরও সাক্ষাৎকার দেওয়া যায়’, খোঁচা যাদবপুরকাণ্ডে)
আরও পড়ুন: পর্ণশ্রীতে মেয়ের সঙ্গে আত্মহত্যা করার আগে চা খেতে খেতে ট্যাংরা নিয়ে আলোচনা বাবার
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কথায়, 'বিজিবি-বিএসএফের উচ্চ পর্যায়ের সভায় সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে এটি (অনুপ্রবেশ এবং 'সীমান্ত হত্যা') নিয়ে। তারপরও কিন্তু ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। এগুলো যেন কমিয়ে আনা যায় আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।' উল্লেখ্য, ত্রিপুরায় বিএসএফ এবং বাংলাদেশি পাচারকারীদের সংঘর্ষে এক বিএসএফ জওয়ান জখম হয়েছিলেন। আর এই সংঘাতের জেরে মৃত্যু হয় এক বাংলাদেশি পাচারকারীর। সেই পচারকারীর দেহ বিজিবির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। (আরও পড়ুন: 'আপ্রাণ চেষ্টা' করেও ব্যর্থ বিজিবি, ফের ভারতে অনুপ্রবেশ বাংলাদেশিদের, আটক ৪)
আরও পড়ুন: 'জয় বাংলা' বাতিল করা নাহিদদের দলের স্লোগান 'ধার' করা হল ভারত থেকেই!
শুক্রবার সন্ধ্যায় ত্রিপুরার সিপাহিজালা জেলার পুটিয়ায় সংঘর্ষ হয় বিএসএফ এবং বাংলাদেশি পাচারকারীদের। সেই সময় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর একজন জওয়ান জখম হন এবং একজন বাংলাদেশি চোরাকারবারীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বিএসএফ জানিয়েছে, শুক্রবার ভারতীয় দুষ্কৃতীদের সঙ্গে চোরাচালানের জন্য পুটিয়া হয়ে রাজ্যে অনুপ্রবেশ করার চেষ্টা করছিল বাংলাদেশিরা। সেই সময় কর্তব্যরত বিএসএফ কর্মীরা ২০ থেকে ২৫ জন বাংলাদেশি পাচারকারীর একটি দলকে লক্ষ্য করে। প্রাথমিক ভাবে বিএসএফ তাঁদের সতর্ক করে সীমান্ত পার করতে বারণ করে। এরই মাঝে দু'বার জওয়ানদের ওপর হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। এরপরই এক রাউন্ড রবার বুলেট ছোড়ে বিএসএফ। তাতে জখম হয় এক পাচারকারী। (আরও পড়ুন: এই প্রথম কৃষ্ণনগর ও বহরমপুরের সঙ্গে সরাসরি রেলপথে জুড়ছে উত্তরবঙ্গ)
আরও পড়ুন: '...হিন্দু মেয়েদের প্রতি অনেক মুসলমান ছেলের অস্বাভাবিক আকর্ষণের কারণ বোঝা যাবে'
পরে সেই পাচারকারীর মৃত্যু হয়। মৃতের নাম মহম্মদ আল-আমীন, বয়স ৩২ বছর। তার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার পুটিয়া গ্রামে। ভারতীয় ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশের পরই বিএসএফ তাকে গুলি করেছিল। কালের কণ্ঠের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, সেই ব্যক্তির দেহ বিএসএফ ক্যাম্পে রাখা ছিল। পরে পতাকা বৈঠকে বসে বিজিবি ও বিএসএফ। বিজিবির হাতে তুলে দেওয়া হয় বাংলাদেশির দেহ। এর আগে গুলিবিদ্ধ আল-আমীনকে নিয়ে গিয়ে ভারতেই এক হাসপাতালে ভরতি করেছিল বিএসএফ। সেখানে তার অপারেশন হয়েছিল। তবে তাও তাকে বাঁচানো যায়নি। (আরও পড়ুন: ট্রাম্পকাণ্ডের পর জেলেনস্কিকে বুকে জড়ালেন UK-র প্রধানন্ত্রী, দিলেন £২.২৬ বিলিয়ন)
ত্রিপুরা সীমান্তের ঘটনা নিয়ে বিজিবি প্রধান বলেন, 'সীমান্ত হত্যা নিয়ে আলোচনা হয় দিল্লিতে। বাংলাদেশিরা যাতে ভারতে অনুপ্রবেশ না করে, তার জন্যে আপ্রাণ চেষ্টা করছি আমরা। তবে আমরা দেখতে পেয়েছি (ত্রিপুরার সিপাহিজালা) ১৫-২০ জন অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করছিল। তখন বিএসএফ বাধা দেওয়ার পরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাত হয়। সেই সংঘাতে বিএসএফ রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে এক যুবকের পেটে লাগে। সেই যুবককে নিয়ে গিয়ে হাসপাতালে অপারেশন করিয়েছিল। তবে সে বাঁচেনি। এ ঘটনায় একজন বিএসএফ সদস্য আহত হয়েছেন। তিনি হাসপাতালে আছেন।' এরপরও তিনি বলেন, 'অবৈধ অনুপ্রবেশ হোক আর যা-ই হোক, হত্যা কোনও সমাধান নয়। এপর আর একটি হত্যাও যদি হয়, তাহলে আমরা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করব।'