বিজেপি নেতা–মন্ত্রীরা বরাবরই তৃণমূল কংগ্রেসকে দুর্নীতিগ্রস্ত দল বলে থাকেন। প্রতি বিষয়ে ইডি–সিবিআই থেকে এনআইএ তদন্তের দাবিও করে থাকে। আর এইসব করে তৃণমূল কংগ্রেসের অনেকে নেতা–মন্ত্রীই জেলে গিয়েছিলেন। এখন বেশিরভাগই জামিনে মুক্ত। তৃণমূল কংগ্রেসও বিজেপিকে আক্রমণ করে থাকেন। কেন্দ্রীয় এজেন্সি অপব্যবহার করে বিরোধী শক্তি ভাঙতে চায় বিজেপি–সহ নানা অভিযোগ। এবার প্রতিবাদ সভা থেকে বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরকে একহাত নিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। আর মমতাবালা ঠাকুর বিস্ফোরক অভিযোগও তোলেন।
গতকাল, শনিবার উত্তর ২৪ পরগণার গাইঘাটা থানার সামনে প্রতিবাদ সভার ডাক দেয় তৃণমূল কংগ্রেস। সেই প্রতিবাদ সভা থেকেই মমতাবালা বলেন, ‘কথায় কথায় সিবিআই ডাকে। এখন তাহলে শান্তনু ঠাকুরকে ধরে না কেন? সাংসদ হওয়ার আগে শান্তনু ঠাকুরের তো কিছুই ছিল না। বর্তমানে ওর হাজার কোটির সম্পত্তি। আমরা জানতে চাই এই সম্পত্তির উৎস কী? এতো টাকা কোথা থেকে এল? সিবিআই এসব কেন দেখতে পাই না?’ এখন দেশে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে পহেলগাঁওয়ের ঘটনা। যা নিয়ে দেশের মানুষ তেতে আছেন। তার মধ্যেই এমন অভিযোগ তুলে শোরগোল ফেলে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ।
আরও পড়ুন: বিপজ্জনক পার্ক সার্কাস বাজার সংস্কারে উদ্যোগ কলকাতা পুরসভার, কোথায় সরতে হবে ব্যবসায়ীদের?
মতুয়াদের জন্য বিজেপি কোনও কাজ করেনি বলে অভিযোগ মমতাবালার। নাগরিকত্ব ইস্যু থেকে শুরু করে নানা বিষয় তুলে ধরেন ঠাকুরবাড়ির এই সদস্য। মমতাবালা ঠাকুরের বক্তব্য, ‘নাগরিকত্বের নামে মতুয়াদের ঠকিয়েছে শান্তনু ঠাকুর এবং তাঁর বিজেপি সরকার। মতুয়াদের জন্য বিজেপি কিছুই করেনি। যা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার আর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। ঠাকুর বাড়িতে রাজনীতি ঢুকিয়েছিল মঞ্জুল ঠাকুর। এটা সবাই জানে। উনিই প্রথম তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক–মন্ত্রী হয়েছিলেন। ঠাকুর বাড়ির উন্নয়ন–সহ মতুয়াদের হরি গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয়, ঠাকুর বাড়ির কামনা সাগরের ঘাট সংস্কার সবই করেছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। নরেন্দ্র মোদী ঠাকুর বাড়িতে এসেছিলেন। কিন্তু মতুয়া আর ঠাকুরবাড়ির জন্য কিছুই দেননি।’ এই অভিযোগের জবাব এখনও আসেনি বিজেপির পক্ষ থেকে।
২০২৬ সালে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে বাংলায়। সেখানে মতুয়ারা আবার জবাব দেবেন বলে জানিয়ে দেন মমতাবালা ঠাকুর। তাঁর কথায়, ‘শান্তনু ঠাকুর একটা বেইমান। ৫ কোটি মতুয়া ভক্তই এসবের জবাব দেবে।’ কদিন আগেই গাইঘাটা থানার সামনে প্রতিবাদ সভা করে বিজেপি। ওই সভা থেকে পুলিশ–সহ রাজ্যের শাসকদলকে বেনজির আক্রমণ করেন বিজেপি নেতারা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন লকেট চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে একাধিক বিজেপি নেতৃত্ব। এবার তারই পাল্টা প্রতিবাদ সভা করল তৃণমূল কংগ্রেস। এদিনের প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস–সহ স্থানীয় একাধিক তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব।