ইন্ডিয়ান আইডলে দর্শকদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন বাংলার খড়গপুরের ছেলে শুভজিৎ চক্রবর্তী। তাঁর সারল্য, গলায় মেঠো সুর, সবই যেন সবার থেকে আলাদা। দারিদ্র্যতার সঙ্গে লড়াই করেই মুম্বইয়ে ইন্ডিয়ান আইডলের মঞ্চে পৌঁছেছে শুভজিৎ। আরও পড়ুন-বাদশার কাছ থেকে আসা অফার ফেরাল ইন্ডিয়ান আইডেলর বাঙালি প্রতিযোগী শুভজিৎ, সিদ্ধান্তে তারিফ শ্রেয়ার
শুভজিতের বাবা, কৃষ্ণদাস চক্রবর্তীর সামান্য পানের দোকান। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর সংসার, মাটির বাড়িতে থাকেন তাঁরা। ছেলের একমাত্র স্বপ্ন, বাবা-মা'র জন্য পাকা বাড়ি বানাবেন। তবে কারুর সাহায্য নিয়ে নয়, নিজের রোজগারের টাকায় তৈরি হবে সেই স্বপ্নের বাড়ি। সেই স্বপ্নের পিছুধাওয়া করতে করতেই আজ কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারীকে নিজের সুরের জাদুতে মুগ্ধ করেছেন শুভজিৎ। খোদ শ্রেয়া ঘোষাল বলেন, 'এই ১৫ সিজন ধরে চলা ইন্ডিয়ান আইডলের অন্যতম সেরা গায়ক তুমি।'
তিন মাসের বেশি সময় ধরে চলছে এই প্রতিযোগিতা। দীর্ঘদিন ঘরছাড়া ছেলে, চলতি সপ্তাহে ইন্ডিয়ান আইডলের মঞ্চে হাজির হবেন শুভজিৎ-এর বাবা-মা। এতদিন পর ছেলেকে কাছে পেয়ে ইমোশন্যাল তাঁরা! ‘বড় নাম করেঙ্গে’ সিরিজের প্রচারে সুরজ বরজাতিয়া এবং গোটা টিম হাজির হয়েছিল আইডলের স্টেজে। সেখানেই বিশেষ অতিথি করিশ্মা কাপুর এবং সূরজ বরজাতিয়া মিষ্টি সারপ্রাইজ দিলেন শুভজিৎ-কে। বাবা-মা'কে দেখে ইমোশন্যাল শুভজিৎ!
এদিন শুভজিৎ-কে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতেই তাঁর মা বন্দনা দেবী বলেন,'টিভিতে তো দেখেছি, কিন্তু ছুঁতে পারিনি।' এদিন মঞ্চে দেখা গেল বাবা-ছেলের যুগলবন্দি। ‘বড়া নাম করেঙ্গে’-র টাইটেল ট্র্যাক গাইলেন শুভজিৎ, আর হারমোনিয়ামে ছেলেকে সঙ্গত করলেন বাবা। সঙ্গীত যে তাঁর রক্তে তা এদিন স্পষ্ট হয়ে গেল। বাবার থেকেই সুর পেয়েছেন শুভজিৎ।
এই পারফরম্যান্স দেখে আবেগঘন বিচারকরাও। করিশ্মা কাপুর, সূরজ বরজাতিয়ারা উঠে দাঁড়িয়ে করতালিতে ভরিয়ে দিলেন শুভজিৎ ও তাঁর বাবাকে। শুভজিতের বাবা কৃষ্ণদাস বাবু একটা সময় গান শেখাতেন। মা গৃহবধূ। বাবার কাছেই ছোটথেকে লোকগান শিখেছেন শুভজিৎ। গানের টিউশানি চলে যায় করোনাকালে। বাধ্য হয়ে পানের দোকান খোলেন কৃষ্ণদাস চক্রবর্তী। গানের স্যার থেকে হয়ে যান পানওয়ালা। কিন্তু সেই নিয়ে আফসোস নেই। ধার-দেনা করে ছেলেকে মুম্বই পাঠিয়েছেন। একটাই স্বপ্ন, ছেলে খড়গপুরের নাম উজ্জ্বল করবে।