দিনেদুপুরে কলকাতার মতো শহরে চলন্ত গাড়ি মাঝরাস্তায় দাঁড় করিয়ে, সেই গাড়ি থেকে ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধাকে জোর করে নামিয়ে অপহরণের চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ! এমনকী, তাঁর সত্তরোর্ধ্ব দাদাকেও রীতিমতো মারধর করা হয়! গাড়ির চালককে🏅 মারতে মারতে নামিয়ে দেওয়া হয় গাড়ি থেকে। শেষমেশ কর্তব্যরত ট্র্যাফিক পুলিশেরকর্মীর তৎপরতা ও সহযোগিতায় গুন্ডাবাহিনীর হাত থেকে কোনও মতে ছাড়া পান ওই বৃদ্ধা ও তাঁর দাদা। অভিযোগ, খোদ পুলিশকর্মীর চোখের সামনে এত কিছু ঘটে যাওয়া সত্ত্বেও এই ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ করছে না কলকাতা পুলিশ! এমনকী, ঘটনায় মূল অভিযুক্তের নাম, ধাম সব বলে দেওয়া সত্ত্বেও তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ।
ঘটনা প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, ষাটোর্ধ্ব যে মহিলার উপর দিনেদুপুরে হামলা চালানো হয়েছিল, 🌳তিনি একজন ব্যবসায়ী। গত প্রায় ২০ বছর ধরে তিনি গাড়িতে করে মুদিখানার সামগ্রী সরবরাহ করেন।
গত ২ এপ্রিলও অন্য়ান্য দিনের মতোই কাজে বেরিয়েছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন তাঁর দাদা ও গাড়ির চালক। ভাই-বোন দু'জনই প্রবীণ নাগরিক। বৃদ্ধার অভিযোগ, উল্টোডাঙা মেন রোড দিয়ে যখন তাঁদের ছোট মালবাহী গাড়িটি যাচ্ছিল, সেই সময়েই প্রথমে একটি মোটরবাইক দ্রু🗹ত সামনে চলে আসে এবং গাড়ির পথ আটকে দাঁড়ায়। এরপর অন্য একটি গাড়িতে প্রায় ১০-১২ জন যুবক সেখানে পৌঁছয় এবং তারা বৃদ্ধাদের গাড়ি ঘিরে ধরে।
প্রথমেই বৃদ্ধার গাড়ির চালককে মেরে স💫্টিয়ারিং থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। বদলে হামলাকারীদের একজন চালকের আসনে বসে এবং জানায়, বৃদ্ধাকে তাদের সঙ্গে পোস্তায় যেতে হবে! বৃদ্ধা তাতে আপত্তি করলে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। গাড়িতেই বসে থাকা বৃদ্ধার দাদা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও তাঁকেও ম🙈ারধর করা হয়।
অন্যদিকে, গুন্ডাবাহিনীর বাকি সদস্যরা দ্রুত তাঁর গাড🎐়িতে থাকা মুদিখানার পণ্য নামিয়ে তাদের সঙ্গে আনা গাড়িতে তুলতে শুরু করে। ইতিমধ্যেই কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশকর্মী সেখানে পৌঁছে যাওয়ায় বৃদ্ধা ও তাঁর দাদা পরিত্রাﷺণ পান।
সংবাদমাধ্যমের হাতে আসা তথ্য বলছে, এই ঘটনার দু'দিন পর গত ৪ এপ্রিল স্থানীয় মানিকতলা থানায় বৃদ্ধা অভিযোগ জানাতে গেলেও পুলিশ নাকি প্রথমে সেই অভিযোগ গ্রহণই করতে চায়নি। শেষে বিস্তর অনুরোধের পর সেই অভিযোগ গ্রহণ করা হয় গত ৮ এপ্রিল। কিন্তু, সেই অভিযোগপত🦋্রে অপহরণের চেষ্টার ধারা যোগ করা হয়নি বলে দাবি করেছেন বৃদ্ধা। বদলে মারধর, যৌন নিগ্রহ, হুমকি, ছিনতাইয়ের চেষ্টার মতো ধারা দেওয়া হয়েছে।
আক্রান্ত মহিলার দাবি, তিনি জানেন এই কাণ্ড কে ঘটিয়েছেন। তিনিও একজন ব্যবসায়ী। তাঁর নাম - গোপাল। গত দু-তিনবছর ধরে তিনি গোপালের কাছ থেকে নুন ও চিনি নিত💞েন। কিন্তু, হিসাবে গরমিল ধরা পড়ায় স𝕴ম্প্রতি তিনি গোপালের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিন্ন করে দেন।
বৃদ্ধার দাবি, গোপালই ওই গুন্ডাবাহিনীকে পাঠিয়েౠছিলেন, তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য এবং তাঁর পণ্য লুট করার জন্য। কিন্তু, তিনি প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করছে না বলে বৃদ্ধার অভিযোগ। তাঁর দাবি, গোপাল তাঁꦗকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, বৃদ্ধা যদি তাঁর কাছ থেকে মাল না কেনেন, তাহলে তাঁকে ব্যবসা করতে দেওয়া হবে না!
অন্যদিকে, অভিযুক্ত ব্যবসায়ী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তাঁর কাছে উত্তর কলকাতার বড় অংশের ডিস্ট্রিবিউটরশিপ রয়েছে। তাই বৃদ্ধা যদি তাঁর কাছ থেকে পণ্য না কেনেন, তাহলে গোপালের কর্মীরা সমস্যায় পড়বেন! সেটাই নাকি বৃদ্ধাকে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছিল! এবং বৃদ্ধা তাঁর কাছে ৩ লক্ষ ৫৭ হাজার টাকা ধার করেছিলেন এবং এখনও সেই ধারের মধ্যে ১ লক্ষ ৫৭ হাজার টাকা বাকি রেখে꧃ছেন।
গোপালের দাবি, এই সমস্ত বিষয় নিয়েই কথা বলার জন্য বৃদ্ধাকে লোক পাঠিয়ে ডেকেছিলেন গোপাল। কিন্তু, তিনি তাঁর কাছে না এসে থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। অন্যদিকে, বৃদ্ধা🌟 জানিয়েছেন - তিনি ইতিমধ্যেই গোপালকে ৩ লক্ষ ৫৭ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে দিꦫয়েছেন। সেই নথিও তাঁর কাছে আছে। মানিকতলা থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্ত চলছে।