🅠 দেশের ইতিহাসে প্রথমবার রাজ্যপালের স্বাক্ষর ছাড়াই আইনে পরিণত হল ১০টি বিল। ১০টি গুরুত্বপূর্ণ বিল আটকে রাখায় সুপ্রিম কোর্টের তোপের মুখে পড়েন তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল আর এন ববি। ওই বিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে রাজ্যপালকে তিন মাস সময় বেঁধে দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। শনিবার রাজ্যপালের পাঠানো কোনও বিলে সিদ্ধান্ত জানাতে রাষ্ট্রপতিকেও সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই আবহে আটকে থাকা বিলগুলি তামিলনাড়ুর রাজ্যপালের স্বাক্ষর ছাড়াই আইনে পরিণত হল।যা দক্ষিণী রাজ্য ও রাজ্যপাল সংঘাতের মধ্যে নজিরবিহীন ঘটনা।
💧তামিলনাড়ুর ১০টি বিল রাজ্যপালের অনুমোদনের জন্য মাসের পর মাস অপেক্ষা করার পর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় ডিএমকে সরকার। সেই মামলায় বিচারপতি এসবি পর্দিওয়ালা এবং বিচারপতি আর মহাদেবনের বেঞ্চ জানায়, ‘এটা স্পষ্ট করে বলে দেওয়া দরকার যে, কোনও সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনও কাজ না করলে আদালত সেখানে হস্তক্ষেপ করতে বিরত থাকবে না।’ রাজ্যপালের পাঠানো কোনও বিলে ‘পকেট ভেটো’ দেওয়ার অধিকার রাষ্ট্রপতির নেই সুপ্রিম কোর্ট অভিমত প্রকাশ করেছে। সুতরাং বিল হয় অনুমোদন অথবা খারিজ করতে রাষ্ট্রপতি বাধ্য। তাও তিন মাসের মধ্যে। সেই মতো তামিলনাড়ু সরকার নিজেদের গ্যাজেটে ১০টি বিলকে আইন হিসাবে ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি জারি করে। ফলে দেশের ইতিহাসে প্রথমবার কোনও আইন এমন পাশ হল যাতে রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর নেই। এই আইনগুলির মধ্যে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন রয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে সংশোধনী আইনও রয়েছে।অন্যদিকে, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন সুপ্রিম কোর্টের ‘ঐতিহাসিক রায়’-কে স্বাগত জানিয়েছেন। আদালত রাজ্যপাল আর এন রবির ১০টি বিলে সম্মতি আটকে রাখার সিদ্ধান্তকে ‘অবৈধ’ এবং ‘স্বেচ্ছাচারী’ বলে রায় দিয়েছে। তিনি বলেন, এটি ভারতের সমস্ত রাজ্যের জন্য একটি বড় জয়।
♚গত কয়েক বছর ধরে ডিএমকে সরকার অভিযোগ করে আসছে যে, রাজ্যপাল রবি ইচ্ছাকৃতভাবে বিলগুলি আটকে রেখে রাজ্যের উন্নয়ন প্রকল্পে বাধা সৃষ্টি করছেন। তাঁরা বলছেন, এটি ‘নির্বাচিত সরকারকে দুর্বল করার’ প্রয়াস এবং ‘জনগণের ইচ্ছার অবমাননা’। এই বিরোধ বারবার শিরোনামে এসেছে এবং সুপ্রিম কোর্টে উঠেছে। ২০২৩ সালের নভেম্বরে আদালত রবিকে প্রশ্ন করেছিল, 'এই বিলগুলি ২০২০ সাল থেকে পড়ে আছে। তিনি তিন বছর ধরে কী করছিলেন?' চলতি বছর জানুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্ট ক্ষুব্ধ হয়ে উভয় পক্ষকে সতর্ক করে বলেছিল, 'এই বিরোধ সমাধান করুন, নইলে আমরা ব্যবস্থা নেব।'
🍸এদিকে, সুপ্রিম কোর্টের এই রায় তামিলনাড়ুর রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে বৃহত্তর প্রশ্ন তুলেছে। ভারতের সংবিধানের ২০০ অনুচ্ছেদে রাজ্যপালের কাছে তিনটি বিকল্প রয়েছে-বিলে সম্মতি দেওয়া, সম্মতি আটকে রাখা, অথবা রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করেছে যে, রাজ্যপাল কোনও বিলে ‘পকেট ভেটো’ বা স্থায়ীভাবে আটকে রাখার ক্ষমতা রাখেন না।