ঘূর্ণিঝড় ইয়াস সব ওলটপালট করে দিয়ে চলে গিয়েছে। কিন্তু দুর্যোগ এখনও বহাল দিঘা–মন্দারমণিতে। কারণ এক ফোঁটা পরিশ্রুত পানীয় জল নেই। চারিদিকে হাহাকার নেমে এসেছে। জীবন টিকিয়ে রাখাটাই কষ্টকর। এই গ্রামের নাম পুরুষোত্তমপুর। মন্দারমণি ব্লকের অন্তর্গত এই গ্রামে প্রকৃতির ভয়ঙ্কর রোষ তৃষ্ণা মেটানোর জলটুকুও আজ অমিল। এখানের টিউবওয়েল থেকে বেরিয়ে আসছে নোনা জল। তার সঙ্গে নোংরা। বাধ্য হয়ে তাই পান করছেন স্থানীয়রা।তবে এই পরিস্থিতিতে অবশেষে সরকারি উদ্যোগে প্রথম পানীয় জল পৌঁছল সেখানে। শনিবার পৌঁছলেও মুহূর্তে তা শেষও হয়ে যায়। বাঙালির অন্যতম প্রিয় বেলাভূমিতে এখন শুধুই ধ্বংসের চিহ্ন। বাঁধ ভেঙে সমুদ্রের নোনা জল ঢুকে মন্দারমণি ব্লকে প্লাবিত হয়েছে বহু গ্রাম। চারদিকে শুধু জল আর জল। কিন্তু পানীয় জল নেই। পানীয় জলের তীব্র হাহাকার। গত তিনদিন ধরে নোনাজল খেয়ে থাকতে হয়েছে মানুষজনকে।স্থানীয় সূত্রে খবর, গত তিনদিন ধরে পেটে খাবার নেই, ভাত নেই, মুড়ি খেয়ে দিন গুজরান করছেন অনেক গ্রামবাসী। আর এই নোংরা নোনা জল ছেঁকে খেতে হচ্ছে। বেশিরভাগ বাড়িই ভেঙে গিয়েছে। নিশ্চিহ্ন গ্রাম যেন ব–দ্বীপ। কারণ গ্রামের মাঝ বরাবর যে পিচ রাস্তা গিয়েছে, জলের তোড়ে তা এখন দু’ভাগে বিভক্ত। এই প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেই পুরুষোত্তমপুর গ্রামে টিম নিয়ে পৌঁছন মন্দারমণির ব্লক মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। কলের জল পরীক্ষা করে দেখেন তাঁরা। টিউবওয়েল খুলে তার ভিতরটা ব্লিচিং দিয়ে পরিষ্কার করেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মানস কুমার ঘোষ জানান, এই জল খাওয়ার উপযুক্ত নয়। আমরা চেষ্টা করছি জল জীবাণুমুক্ত করতে। শনিবারই পুরুষোত্তমপুর গ্রামে প্রথম ঢুকল পানীয় জলের একটি গাড়ি। ১২০০ পরিবারের তিনদিনের তৃষ্ণা মোটানোর খোরাক। সবাই চান একটু বেশি করে জল ধরে রাখতে। এখন পুরুষোত্তমপুর কত তাড়াতাড়ি ছন্দে ফেরে, এখন সেটাই দেখার।