অবশেষে শহিদ সেনা জওয়ান ঝন্টু আলি শেখের বাড়িতে যাচ্ছেন বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্য়ের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আজ (মঙ্গলবার - ২৯ এপ্রিল, ২০২৫) সংবাদমাধ্যমে যে খবর সামনে এসেছে, সেই অনুসারে - ইতিমধ্যে নদিয়ার তেহট্টে - ঝন্টুর গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন তিনি। তাঁর এই সফর নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের কেউ বলছেন, শুভেন্দু অধিকারীর 'বিলম্বিত বোধোদয়' হয়েছে। আবার কারও দাবি, শহিদ জওয়ানের দাদার কাছ থেকে মানবতার পাঠ নিক ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করা গেরুয়া শিবির।
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পরই উধমপুরে সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে জড়ায় সেনাবাহিনী। সেই সময় সেখানে ঝন্টুও ছিলেন। গুলিবিদ্ধ হন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও ঝন্টু আলি শেখকে বাঁচানো যায়নি। এরপর তাঁর দেহ কলকাতা বিমানবন্দর হয়ে নদিয়ার তেহট্টের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।
শহিদ জওয়ানকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের ভিড় উপচে পড়ে। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সাংসদ মহুয়া মৈত্র-সহ অন্যরা পৌঁছে যান ঝন্টুর বাড়িতে তাঁকে সম্মান ও শ্রদ্ধা জানাতে। অন্যদিকে, কংগ্রেসের তরফে বিমানবন্দরেই শহিদকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। বামেরাও ঝন্টুর গ্রামের বাড়ি যান এবং শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন।
এরপর নিয়ম মেনে শহিদ সেনা জওয়ানকে পূর্ণ মর্যাদায় শ্রদ্ধা জানায় সেনাবাহিনী। তারপর তাঁকে দফন করা হয়। কিন্তু, এই পুরো পর্বের কোথাও বিজেপি নেতাদের দেখা পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ। এমনকী, সেই সময় সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল একটি অডিয়ো রেকর্ডিং (হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা ওই অডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি) উদ্ধৃত করে দাবি করা হয়, দুই বিজেপি নেতা নাকি শহিদ জওয়ানের ধর্ম নিয়ে আলোচনা করছিলেন। সেই অডিয়ো ভাইরাল হতে চাপ বাড়তে শুরু করে বিজেপির উপর।
যদিও প্রকাশ্য়ে তা মানতে নারাজ গেরুয়া শিবির। বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য যেমন দাবি করেন, স্থানীয় নেতারা নাকি ঝন্টুর বাড়িতে গিয়েছিলেন। পরে শীর্ষ নেতারা যাবেন। আর, আজ শোনা গেল শুভেন্দু অধিকারী তেহট্টে রওনা দিয়েছেন। তিনি শহিদের স্ত্রীর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করতে চান বলে শোনা যাচ্ছে। শহিদের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতার প্রস্তাবও দেওয়া হতে পারে।
এই বিষয়ে বিজেপির যে বক্তব্য সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে, তা হল - যেহেতু শুভেন্দু অধিকারী মুর্শিদাবাদে হিংসায় আক্রান্ত পরিবারগুলিকে নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, তাই এই সময়ে তিনি ঝন্টু আলি শেখের বাড়ি যাচ্ছেন।