ওষুধ মিলবে না পাকিস্তানে? ওষুধের জন্য হাহাকার পড়ে যাবে? সেরকম পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, সেজন্য ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ধাক্কা খাওয়ার পরেই পাকিস্তান 'জরুরি ভিত্তিতে' পদক্ষেপ করছে বলে একটি প্রতিবেদনকে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিয়ো নিউজে দাবি করা হয়েছে যে ওষুধ তৈরির উপকরণের যাতে অভাব না হয়, সেজন্য পাকিস্তানের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তরফে 'জরুরি প্রস্তুতি' নেওয়া হচ্ছে। কারণ পাকিস্তানে যে পরিমাণ ওষুধের উপকরণের প্রয়োজন হয়, তার ৩০-৪০ শতাংশই ভারতের থেকে পেত। এখন নিজেরাই নিজেদের পায়ে কুড়ুল মেরে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করে দেওয়ায় এবার অন্য দেশ থেকে সেই উপকরণের বন্দোবস্ত করতে হবে পাকিস্তানকে।
যদিও বিষয়টি নিয়ে সরকারিভাবে পাকিস্তানের তরফে কিছু জানানো হয়নি। পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে জানানো হয়েছে যে নয়াদিল্লির সঙ্গে ইসলামাবাদ যে বাণিজ্যিক সম্পর্কে ইতি টানার কথা বলেছে, সেটার ফলে ওষুধের ক্ষেত্রে কতটা প্রভাব পড়বে, তা নিয়ে সরকারিভাবে কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি বলে নিশ্চিত করেছে পাকিস্তানের ওষুধ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ।
চিন, রাশিয়ার দিকে তাকিয়ে পাকিস্তান, দাবি রিপোর্টে
সরকারিভাবে বিজ্ঞপ্তি জারি করা না হলেও পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তানি ওষুধ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের এক আধিকারিককে উদ্ধৃত করে ওই সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে বলা হয়েছে যে '২০১৯ সালের সংকটের পরে এরকম পরিস্থিতি সামলানোর জন্য আমরা প্রস্তুতি শুরু করেছিলাম। ওষুধের ক্ষেত্রে চাহিদা পূরণের জন্য আমরা সক্রিয়ভাবে বিকল্প উৎস খোঁজার চেষ্টা করছি।' রিপোর্ট অনুযায়ী, চিন, রাশিয়া এবং কয়েকটি ইউরোপের দেশ থেকে ওষুধের উপকরণ নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছে পাকিস্তান।
আরও পড়ুন: শিমলা চুক্তি স্থগিত! হিমাচল রাজভবনের ঐতিহাসিক টেবিল থেকে উধাও পাকিস্তানের পতাকা
মুখে যা বলছে, বাস্তবে তার উলটো হবে কি?
মুখে সেই সাহসী ছবি তুলে ধরা হলেও বাস্তবের পরিস্থিতিটা কী হবে, তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে সংশ্লিষ্ট মহল। পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই রিপোর্টে জানানো হয়েছে যে ভারত থেকে যেহেতু অনেক গুরুত্বপূর্ণ ওষুধের উপকরণ আনা হত, তাই আচমকা বাণিজ্য থমকে যাওয়ায় জোগানের অভাব হবে। সেই পরিস্থিতিতে কালোবাজারির আশঙ্কা আরও বাড়বে। ফলে স্বভাবতই ওষুধের মান কেমন হবে, তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন উঠে যাবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানি সেনাপ্রধানের মুখ থেকে পড়ল ‘বিষ’! পহেলগাঁও হামলার পরেই স্পষ্ট সবটা?
নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুড়ুল মারল পাকিস্তান!
আর সেইসব আশঙ্কা তৈরি হয়েছে পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পরবর্তীতে। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর পরে সিন্ধু জলচুক্তি রদ-সহ পাঁচটি বড় পদক্ষেপ করে ভারত। পালটা ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে পাকিস্তান। কিন্তু তাতে নিজেরাই নিজেদের পায়ে কুড়ুল মেরেছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
আরও পড়ুন: 'ভারতে মরে যাব, নরকে ফিরব না!' আতঙ্কে ভুগছেন পাকিস্তানি হিন্দু শরণার্থীরা
পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে পাকিস্তানি ফার্মাসিউটিক্যাল ম্যানুফাকচার্স অ্যাসোসিয়েশনের তৌকির-উল-হক বলেছেন, ‘বাণিজ্য সম্পর্ক স্থগিত করে দেওয়া নিয়ে পাকিস্তানি ওষুধ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ এবং বাণিজ্য মন্ত্রকের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার আওতা থেকে ওষুধের ক্ষেত্রকে বাদ দেওয়ার আর্জি জানিয়েছি আমরা। কারণ এমন অনেক জীবনদায়ী জিনিস আছে, যার উপকরণ স্রেফ ভারত থেকেই আসে।’