পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার প্রেক্ষাপটে রাজস্থান সরকারের শিক্ষা বিভাগের ওয়েবসাইট হ্যাক করার অভিযোগ উঠল। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অনুসারে - আজ (মঙ্গলবার - ২৯ এপ্রিল, ২০২৫) এই ঘটনা ঘটে।
এদিন দেখা যায়, শিক্ষা বিভাগের ওয়েবসাইটের হোমপেজে রয়েছে একটি ব্যঙ্গাত্মক বার্তা। তাতে ২০১৯ সালে ভারতীয় বায়ুসেনা আধিকারিক অভিনন্দন বর্তমানের পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে ধরা পড়ার ঘটনা উল্লেখ করে ভারতীয় প্রশাসনের উপহাস করা হয়। এছাড়াও, গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে যে হামলা চালানো হয়েছে, সেই ঘটনা সম্পর্কেও বেশ কিছু আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়।
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী মদন দিলওয়ার জানিয়েছেন, এই ঘটনা চোখে পড়া মাত্রই পদক্ষেপ করা হয়েছে। শিক্ষা বিভাগের তথ্যপ্রযুক্তি শাখা তাদের কাজ শুরু করে দিয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, এই ঘটনার জন্য সাময়িকভাবে ওয়েবসাইট বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে, শীঘ্রই সেটি পুনরায় স্বাভাবিকভাবে কাজ করা শুরু করবে।
অনুমান করা হচ্ছে, এই ঘটনার নেপথ্য হ্যাকারদের কোনও গোষ্ঠী বা দুষ্ট চক্র থাকতে পারে। কারণ, শিক্ষা বিভাগের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, গোটা ঘটনা সম্পর্কে সাইবার নিরাপত্তা সংস্থাগুলিকে অবগত করা হয়েছে। এবং একটি তদন্ত শুরু করা হয়েছে। যাতে যে গোষ্ঠী এই হ্যাকিংয়ের জন্য দায়ী,তাদের চিহ্নিত করা সম্ভব হয়।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, হ্যাকারদের কাছে কোনও গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে যায়নি তো? শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁরা এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে নিশ্চিত নন যে এমন কোনও অঘটন ঘটেছে কিনা। যদিও সতর্কতা হিসাবে এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গোটা ব্যবস্থাপনাটিকেই তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পুলওয়ামায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলা চালানো হয়। তার জবাবে পালটা অভিযানে নামে ভারতীয় বায়ুসেনা। সেই সময় বায়ুসেনার একজন উইং কমান্ডার ছিলেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন অভিনন্দন বর্তমান। সেই পালটা অভিযানে সামিল হয়েছিলেন তিনিও। পাকিস্তানি যুদ্ধবিমানকে তাড়া করার সময় তাঁর বিমান গুলি করে নামায় পাক সেনা। তার ঠিক আগের মুহূর্তেই পাকিস্তানের একটি এফ-১৬ ফাইটার জেট লক্ষ করে সফল হামলা চালান অভিনন্দন। অভিনন্দনকে এরপর ধরে ফেলে পাক সেনাবাহিনী। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের ১ মার্চ তাঁকে আবার ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
২০২১ সালের নভেম্বর মাসে রাষ্ট্রপতি ভবনে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অভিনন্দন বর্তমানকে বীর চক্র প্রদান করা হয়। তাঁকে সেই সম্মানে ভূষিত করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। উল্লেখ্য, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বীর চক্র হল ভারতীয় সেনার তৃতীয় সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান। পরম বীর চক্র এবং মহা চক্রের পরই এর স্থান।